জন্ম স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে, বয়স ২৫। তবে হঠাৎ দেখায় মনে হবে, সদ্য কৈশোরে পা রেখেছেন। প্রমীলা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরু হতে না হতেই আলোচনার কেন্দ্রে আবতাহা মাহিন মাকসুদ। বিশেষ করে নজর কেড়েছেন হিজাব পরে খেলতে নেমে।
বিশ্বকাপের আগেই তার খেলা হয়ে গেছে ৫৩টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি, খেলেছেন ৮টি ওয়ানডেও। হয়ে উঠেছেন অনেকের রোল মডেল, যারা তাকে দেখে বিশ্বাস করতে শিখেছেন- ধর্মীয় মূল্যবোধ ঠিক রাখাও জরুরী।
আবতাহা ক্রিকেটার হিসেবে ইতোমধ্যে বেশ নামডাক কুড়িয়েছেন। ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সুবাদে সেখানে থাকা পাকিস্তানি ও এশিয়ার অন্যান্য মুসলিম কিশোরীরা তাকে দেখলে কথা বলতে মুখিয়ে থাকেন। তার নিজের সেরকম কোনো রোল মডেল ছিলেন না। তাই কেউ তার সাথে কথা বলতে এলে তিনি সানন্দে এগিয়ে যান।
দ্য টেলিগ্রাফকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আবতাহা বলেন, ‘দুর্ভাগ্যবশত এমন এক ধরনের স্টেরিওটাইপ আছে যে মুসলিম নারীরা খেলাধুলা করতে পারবেন না। আমি দেখাতে চাই, এটা যে সত্যি নয়। সাংস্কৃতিক বাধা থাকতে পারে। কিন্তু ধর্মীয়ভাবে এটা কখনই কোনো বাধা নয়। বিশেষ করে আমার পরিবারে। আমার বাবা আমার এক নম্বর সমর্থক। আমি কে, আমি কী পরিধান করি এজন্য আমি যা চাই তা করতে পারব না- আমার পরিবার কখনও এমনটা বলেনি। আমি মানুষকে দেখাতে চাই, তুমি কে, কোথা থেকে এলে, কী পরছো তা কোনো বাধা নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘তুমি যদি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার হতে চাও, বড় কিছু হতে চাও, আমি মনে করি পরিবারের সমর্থন খুবই জরুরী। আমি খুশি যে এই সমর্থনটা আমি পেয়েছি।’
আবতাহার বাবা-মা পাকিস্তানি। তারা স্কটল্যান্ডে পাড়ি জমালে সেখানে তার জন্য হয় ১৯৯৯ সালে। বাবার পরামর্শে হয়েছেন লেগ স্পিনার। বাবা-মা যেদিন তাকে ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি করলেন, গিয়ে দেখলেন তিনিই একমাত্র নারী ক্রিকেটার সেখানে!
দ্য হান্ড্রেডে একবার লেগ স্পিনের কিংবদন্তি প্রয়াত শেন ওয়ার্নের সাথে দেখা হয়েছিল তার। কিন্তু এতটাই লাজুক ছিলেন, কথাও বলেননি। আশেপাশের সবাই বলছিলেন- আরে তুমিও তো লেগ স্পিনার, কেন তার কাছ থেকে পরামর্শ নিচ্ছ না! কিন্তু লাজুক আবতাহা ঠায় দাঁড়িয়ে ছিলেন, চুপ করে দেখছিলেন লেগ স্পিনারদের স্বপ্নের মহানায়ককে। ওয়ার্নের মৃত্যুর পর আয়েশা অবশ্য বুঝতে পারেন, যখনই সুযোগ আসে তখনই হিরোদের সাথে কথা বলে নেওয়া উচিৎ।
বাংলাদেশের বিপক্ষে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ৪ ওভার বল করে ২৪ রান খরচ করলেও কোনো উইকেট পাননি এই লেগ স্পিনার।