দেশীয় কোম্পানি স্কাই বিজ লিমিটেডের হাত ধরে বাংলাদেশ ড্রোনের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। বেপজার নির্বাহী পরিচালক (জনসংযোগ) এ এস এম আনোয়ার পারভেজ বলেন, বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) সঙ্গে এ-সংক্রান্ত একটি চুক্তি করবে স্কাই বিজ।
কৃষিক্ষেত্রে কীটনাশক স্প্রে, অগ্নিনির্বাপণ, দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় ত্রাণ কার্যক্রমে সফলতা বাড়াতে কাজ করবে এসব ড্রোন। প্রতিষ্ঠানটি আগামী বছর থেকে বেশ কয়েকটি মডেলের ড্রোন উৎপাদন করবে বলে জানা গেছে।
বেপজাকে দেওয়া স্কাই বিজের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে তারা অগ্নিনির্বাপণের জন্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রোটারি উইং এবং সিনেমাটোগ্রাফি, ম্যাপিং ও সার্ভিলেন্স উপযোগী ফিক্সড উইং বা ভিটল দিয়ে কমার্শিয়াল উৎপাদন করবে ২০২৫ সালের শুরুতে। পরবর্তীকালে তারা ফিক্সড ও রোটারি উইংয়ের আরও ১০টি মডেলের ড্রোনের উৎপাদনে যাবে; যেগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন পেলোড, এনডোরেন্স থাকছে। প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন মডেলের ৭৩১৪টি আনম্যান্ড এরিয়াল ভেহিকলের (ইউএবি) বার্ষিক উত্পাদন ও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
এ জন্য স্কাই বিজ রপ্তানিমুখী হাইটেক শিল্প স্থাপন করছে চট্টগ্রামের মিরসরাই বেপজা ইকোনমিক জোনে। সেখানে তারা ৪৫ দশমিক ৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। রপ্তানিমুখী এ শিল্প কারখানা থেকে বছরে ১৬৯ মিলিয়ন ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য রপ্তানির আশা করছেন এর উদ্যোক্তারা।
স্কাই বিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জসীম আহমেদ বলেন, “আসলে কতগুলো স্বপ্নবাজ আত্মবিশ্বাসী তরুণের স্বপ্ন এটি। তাদের সমন্বিত প্রচেষ্টা ও উদ্ভাবনের আকাঙ্ক্ষা আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছে। তাদের চোখ ও শরীরের ভাষা আমাদের সাহসী করে তোলে। তারা যখন জানাল, ইউএবি টেকনোলজি তৈরিতে তারা অনেক দূর এগিয়েছে, কিন্তু পর্যাপ্ত আরঅ্যান্ডডি সাপোর্ট পাচ্ছে না, তখন আমরা তাদের সঙ্গে যোগ দিই। বিদেশে ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করি, তাতে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসে।”
তিনি বলেন, “পরবর্তীকালে আমরা বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করে আমাদের পরিকল্পনা, বিনিয়োগ এবং এই হাইটেক পণ্য রপ্তানির গ্লোবাল মার্কেটে সম্ভাবনার কথা জানাই। তিনি আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছেন বলেই আমরা স্বপ্ন পূরণের কাছাকাছি পৌঁছতে পেরেছি।” বেপজাকে দেওয়া প্রস্তাবে বছরে ৭ হাজার ৩১৪টি ড্রোন তৈরি ও রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা দেখিয়েছেন বলে জানান জসীম আহমেদ।
ইপিজেড ভিত্তিক শিল্প কারখানা বিশেষ করে ঢাকা ও ঈশ্বরদী ইপিজেডে এ শিল্পোদ্যোক্তা ইতোমধ্যে টেক্সটাইল এবং গার্মেন্ট এক্সেসরিজ খাতে বিনিয়োগে সাফল্য পেয়েছেন। তৈরি পোশাক শিল্পেও তার বিনিয়োগ আছে। ইপিজেডভিত্তিক শিল্প কারখানা গ্লোবাল লেভেলস বাংলাদেশ লিমিটেড (স্পেন-বাংলাদেশ যৌথ বিনিয়োগ) এবং জিংকি গ্লোবাল টেক্সটাইল বাংলাদেশ লিমিটেডের (চায়না-বাংলাদেশ যৌথ বিনিয়োগ) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতাও তিনি।